নিজস্ব প্রতিবেদক
সদ্য অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলা আইনজীবি সমিতির নির্বাচন। দায়িত্ব পেতে না পেতেই জমি আতœসাতের অভিযোগের মুখে পড়েছেন জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল। তার বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতা আল জয়নাল। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল। তিনি তার সভাপতি পদবীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংক হতে ক্রয়কৃত আলজয়নালের জমি আত্মস্বাৎ এবং মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার ও প্রতিকার পাওয়ার আবেদন।
বরাবর,
পুলিশ সুপার মহোদয়
নারায়ণগঞ্জ।
বিষয়ঃ- এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সভাপতি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি। তাহার সভাপতি পদবীর ক্ষমতা অপব্যবহার করিয়া ও প্রভাব খাটাইয়া ব্যাংক হইত ক্রয়কৃত আমার জমি আত্মস্বাৎ এবং মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার ও প্রতিকার পাওয়ার আবেদন।
জনাব
যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নি¤œ স্বাক্ষরকারী আলহাজ্ব মোঃ জয়নাল আবেদীন, পিতা-মরহুম আব্দুর রহিম, সাং ৫৬ নং এস,এম মালেহ রোড, আল-জয়নাল প্লাজা, নারায়ণগঞ্জ, এই মর্মে জানাইতেছি যে, নি¤œ তফসিল ভূক্ত ৬২ শতাংশ সম্পত্তির সি,এস ও এস,এ রেকর্ডিয় মালিক ছিলেন রেকমত আলীগংদের মধ্যে ঘরোয়ানা আপোষ বন্টনের মাধ্যমে রেকমত আলীর পূত্র আইছালীর প্রাপ্ত ৩১ শতাংশ সম্পত্তি বিগত ২৮/০৮/১৯৭১ ইং তারিখে ২৯৪০ নং সাফকবলা দলিল মুলে মৌলভী গফুরগং ক্রয় করিয়া নি¤œ তফসিল বর্নিত সম্পত্তি বিগত ১৯৭৮ ইং সনে পুবালী ব্যাংক লিমিটেড নারায়নগঞ্জে গফুর জুট বেলিং হিসাব নং- সি.সি ৪৩ (৪) ইউসুফ এন্ড কোম্পানী জুট লিমিটেড হিসাব নং সি.সি ৮২ এই ঋনের বিপরীতে তফসিল ভূক্ত সম্পত্তি সহ অত্র খতিয়ানের অনালিশা সম্পত্তি বন্ধক রাখিয়া ঋন গ্রহন করেন। আব্দুল গফুর গং নালিশা ভূমিতে পূবালী ব্যাংকের নামিয় সাইন বোর্ড টানাইয়া ভোগ দখলে বিদ্যমান থাকে। পরবর্তীতে ব্যাবসায়ীক মন্দার কারনে উক্ত মৌলভী গফুর গং ব্যাংকের ঋন পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের ঋন আদায়ের জন্য নারায়নগঞ্জের বিজ্ঞ সাব জজ আদালত নারায়ণগঞ্জ দেঃ ১১২/১৯৮৬ নং মোকদ্দমায় বিগত ০৭/০৯/১৯৮৭ ইং তারিখে রায় ও বিগত ২৩/০৯/১৯৮৭ ইং তারিখে ডিক্রী প্রাপ্ত হয়। তৎপরবর্তীতে পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার ফলে ব্যাংকের বন্ধকী ঋন পরিশোধের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মরহুম গফুরগংদের ওয়ারিশগন তফসিল ভূক্ত সম্পত্তি সহ অন্যান্য অনালিশা খতিয়ানের এবং অনালিশা দাগের সম্পত্তির ব্যাংকের ঋন পরিশোধের জন্য বিগত ২০/০৭/২০০৫ ইং তারিখে আমি আলহাজ্ব মোঃ জয়নাল আবেদীন এর সহিত চুক্তি পত্র দলিল সহি সম্পাদন করিয়া চুক্তি পত্রে আবদ্ধ হন, এবং সেমতে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড নারায়নগঞ্জ শাখায় বিগত ২৫/০৮/২০০৫ ইং তারিখে তিন পক্ষের মধ্যে এক সমঝোতার মাধ্যমে চুক্তি পত্র মোতাবেক আমি অত্র দরখাস্তকারী ব্যাংকের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করি এবং চুক্তি পত্র মোতবেক ব্যাংক হইতে অবমুক্তকৃত সম্পত্তির মালিক ভোগদখলকার নিয়ত হই। তৎপরবর্তীতে আমি অত্র দরখাস্তকারী ব্যাংকের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করিলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমার বরাবরে দায়মুক্তি সার্টিফিকেট প্রদান করে।
বিগত ইং তারিখে ৩৬১৯ নং বায়নাপত্র ও ৩৬২০ নং আমমোক্তার নামা দলিলে পূবালী ব্যাংক লিঃ এর উর্ধতন কর্মকর্তাগন যথা পূবালী ব্যাংক লিঃ নারায়নগঞ্জ শাখার মহা-ব্যবস্থাপক ফজলুল হক এবং সহকারী মহা ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান ও সিনিয়র অফিসার মোঃ তোফাজ্জল হোসেন স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর প্রদান করেন এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও গফুরগংদের ওয়ারিশগন যৌথ ভাবে অত্র তফসিল ভূক্ত ৩১ শতাংশ সম্পত্তিসহ অপরাপর ভূমি আমার বরাবরে সরেজমিনে স্থানীয় সার্ভেয়ার দ্বারা মাপঝোপ করিয়া ভূমির দখল বুঝাইয়া দেয়।
এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল (বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি), পিতা-মৃত ফোরকান মোল্লা সাং কলেজ রোড, থানা-ফতুল্লা, জেলা নারায়ণগঞ্জ, তাহার পিতার নামে উক্ত সম্পত্তি হইতে ৪ শতাংশ সম্পত্তি বিগত ০৮/০৮/১৯৯৯ ইং তারিখে খরিদ করিয়াছে মর্মে দলিল সৃজন করিয়া তফসিল বর্নিত সম্পত্তি সম্পর্ক ৫,০০,০০০/-( পাঁচ লক্ষ) টাকা চাদাঁ দাবী করিয়া জানায় যে, উক্ত দাবীকৃত টাকা দিলে সে এই সম্পত্তি আর দাবী করিবে না। কিন্তু চাঁদা না দেওয়াতে জোর পূর্বক টিনের ঘর নির্মান করে। এই মর্মে আমি একে একে ফতুল্লা মডেল থানায় বিগত ২৯/০৮/২০১২ ইং তারিখে ১৪৪৫ নং এবং বিগত ২৫/০২/২০১৫ ইং তারিখ ১৩২৮ নং জিডি লিপিবদ্ধ করাই। আমি এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলকে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও উভয় পক্ষের আইনজীবী রাখিয়া দলিল পত্র পর্যালোচনা করিয়া মিমাংসা করিবার কথা বলিলে সে এই প্রস্তাবে রাজি না হইয়া আমাকে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করিয়া নারায়ণগঞ্জ কোর্টে আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সেক্রেটারি হিসাবে প্রভাব খাটাইয়া আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করে। তৎপরবর্তীতে এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল বল প্রয়োগ করিয়া তার তৈরীকৃত আপোষ নামায় সহি স্বাক্ষর করিতে আমাকে বাধ্য করে।
ভূমি আত্মস্বাৎকারী ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী এডভোকেট জুয়েল আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ন মিথ্যা ঘটনা সাজাইয়া বিজ্ঞ চীফ জুডিঃ ম্যাজিঃ আদালতে সি,আর মামলা নং ১৫০/১৫ একটি চাদাঁবাজীর মামলা দায়ের করে। তাহার দায়েরকৃত এজাহার মোতাবেক বিজ্ঞ আদালত আমার বিরুদ্ধে সুবিচারিক দৃষ্টিতে বিচার না করিয়া এডভোকেট জুয়েল এর দ্বারা প্রভাবিত হইয়া ৩৮৫ ধারার জামিন অযোগ্য কোন প্রকার সুনিদৃষ্ট প্রাইমাফেসি (চৎরসধভধপরব ঈধংব)কেইস না থাকা সত্বেও কোন রূপ তদন্ত ব্যতিরিকে গ্রেফতারী পরোয়ানা হাসিল করে। আমি যেন তাহার এহেন বে-আইনী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করিতে না পারি সে জন্য তাহার ছোট ভাইকে ভিকটিম সাজাইয়া এজাহারে অন্য কাহারো নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করিলেও আমার বিরুদ্ধে এজাহারের গর্ভে সি,আর ১৫০/১৫ নং মামলার মিথ্যা ঘটনার জের ধরিয়া সন্দেহ দেখাইয়া ফতুল্লা থানায় অপর একটি মামলা নং ৭৫(০৩)১৫ রুজু করাইয়া সামগ্রীক ভাবে অযথা হয়রানী করায় । যাহা পুলিশ কর্তৃক পরবর্তীতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তক্রমে উক্ত মামলার ঘটনায় আমি জড়িত নয় মর্মে চুড়ান্ত রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করে।
এখানে উল্লেখ্য যে, আমি নি¤œ স্বাক্ষরকারী একজন প্রতিষ্ঠিত স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফ.বি.সি.সি আই ও বি,কে,এম,ই,এ এর সদস্য, ডাইরেক্ট অব বাংলাদেশ গ্রে এন্ড ফিনিসড ফেব্রিক্স মিলস লিঃ এন্ড এক্সপোর্টার এসোসেয়েশন, ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা এবং চেয়ারম্যান নারায়ণগঞ্জ জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান, এশিয়ান রেডিও,ঢাকা এবং উপদেষ্টা এশিয়ান টিভি এবং নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সাধারণ সদস্য সহ বিভিন্ন কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা হই বটে। এডভোকেট জুয়েল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজীর মোকদ্দমা দায়ের করিয়া বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় মিথ্যা খবর প্রকাশ করার কারনে আমি ব্যবসায়িক,সামাজিক, পারিবারিক ও আর্থিক ভাবে মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হইয়াছি। মূলত আমার খরিদা নিম্ম তফসিল বর্নিত জমি অন্যায় ও অবৈধ ভাবে সে ও তাহার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা জোর পূর্বক দখল করার জন্য এবং আমার মান সম্মান ক্ষুুন্ন করিবার উদ্দেশ্যে উক্ত মিথ্যা মোকদ্দমা দায়ের করিয়াছে। প্রকৃত পক্ষে আমার পূর্ববর্তীগন ১৯৭১ সনে তফসিল ভূক্ত সম্পত্তি খরিদ করিয়া ব্যাংক ঋণ গ্রহন করে। যাহা প্রায় ২৫ বৎসরের উর্দ্ধকাল যাবৎ ব্যাংকের নিকট দায় বদ্ধ ছিল। ব্যাংকে দায়বদ্ধ থাকাকালীন সময়ে বে-আইনী ভাবে নিঃস্বত্ববান ব্যাক্তিগনকে দাতা সাজাইয়া এডঃ জুয়েলের বাবা খরিদ করে দেখায় পরবর্তীতে তাহার বাবার নিকট বিক্রয়কারী দাতাগনই বিগত ২৫/১১/২০১৫ ইং তারিখে ১১৫৮৯ নং ঘোষনা পত্র দলিল রেজিষ্ট্রী করিয়া ‘‘তাহাদের মালিকানা সঠিক ছিলনা’’ মর্মে ঘোষনা দেয়। তৎকারনে এডঃ জুয়েল আমার মালিকানাধীন সম্পত্তি বেআইনী ভাবে দখল করিয়া আত্মসাত করিবার হীন উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজীর ও আপর একটি হয়রানীমূলক মামলা দায়েরের মাধ্যমে পুলিশী হয়রানী করিয়া একজন আইনজীবী হইয়াও আইনের অপপ্রয়োগ করিয়াছে।
অতএব, মহোদয়ের প্রতি বিনীত প্রার্থনা এই যে, এডভোকেট জুয়েল কর্তৃক সম্পত্তি আত্মস্বাৎ সহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা মোকদ্দমার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দলিল পত্রাদি যাচাই করিয়া প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে সদয় মর্জি হয়।